রসে টসটসে বেগুনি রঙের মিষ্টি ফল হলো জাম। এ ফলটি খেতে কার না পছন্দ।

জাম খেতে বেশ সুস্বাদু। এ ফলটি অনেক ওষুধিগুণও আছে। এতে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ এবং ফ্রুটোজ পাওয়া যায়া। তাহলে চলুন জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই:
জামে গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ রয়েছে, যা শরীরে যোগায় কাজ করার শক্তি। ক্লান্তির পর জামের শরবত শরীরকে চাঙা করে। জাম স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম ভীষণ উপকারী একটি ফল। চীনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত জাম খাওয়ার ফলে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষের ডায়াবেটিক কমে গেছে। এটি রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। জাম ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে শরীর সুস্থ রাখে। এক চা চামচ জামের বিচির গুঁড়া খালি পেটে প্রতিদিন সকালে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

আয়ুর্বেদিক ওষুধে জাম পাতা ব্যবহার করা হয় ডায়রিয়া ও আলসার নিরাময়ে। এছাড়াও মুখের স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার হয় জামপাতা। জাম খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়, দাঁত ও মাড়ি শক্ত ও মজবুত করে এবং দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোধে সাহায্য করে।

জামে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। এজন্য জাম শরীরে ভিটামিন ‘সি’র ঘাটতি পূরণ করে এবং একইসঙ্গে ভিটামিন ‘সি’র অভাবজনিত রোগগুলো প্রতিরোধ করে থাকে। এছাড়া মুখের দুর্গন্ধরোধ, দাঁত মজবুত, মাড়ি শক্ত এবং মাড়ির ক্ষয়রোধেও জামের জুড়ি নেই।

জামে প্রচুর পরিমাণে থাকে আয়রন। এটি শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে। জাম রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদপিণ্ড ভালো রাখে। এছাড়া শরীরের দূষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়।

জামে ক্যালোরি থাকে কম, যা ক্ষতিকর তো নয়ই বরং স্বাস্থ্যসম্মত। তাই যারা ওজন নিয়ে চিন্তায় আছেন এবং নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন, তাদের খাদ্য তালিকায় থাকতে পারে জাম।

পুষ্টিবিদরা তাজা ফল এবং সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জামে সেসব উপাদান আছে যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
জাম খাবার সময় মুখের লালার মধ্যে যে রঞ্জক পদার্থ উৎপাদিত হয়, যা হতে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার জন্ম নেয়। এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া হতে মুখে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর জাম মুখের ভেতর উৎপাদিত ক্যান্সারের সহায়ক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব থেকে দেহকে রক্ষা করে মুখের ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রঙিন ফলের ভেতর যে পরিমাণ যৌগিক উপাদান রয়েছে, এর মধ্যে জামে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ যৌগিক উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করে।

জামে ফাইটো কেমিক্যালস আর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বিদ্যমান যা দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সঙ্গে সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি দেয়। প্রতিরোধ করে ইনফেকশনের মতো সমস্যারও। জামে পাওয়া গেছে অ্যালার্জিক নামে এক ধরনের এসিডের উপস্থিতি, যা ত্বককে করে শক্তিশালী।

জাম ক্ষতিকর আলট্রা-ভায়োলেট রশ্মির প্রভাব থেকে ত্বক ও চুলকে রক্ষা করে। এটি অ্যালার্জিক এসিড ক্ষতিকর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।